উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীকে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমার আওতায় আনার উদ্যোগ
দেশের সরকারি-বেসরকারি সকল প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থীকে ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা’র আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সোমবার (৪ মার্চ) দেশের সকল জেলা প্রশাসকের চিঠি পাঠিয়েছে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ।
কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা পরিকল্পটির উদ্দেশ্য হলো দেশের শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ করা। এ বীমার আওতায় ৩ থেকে ১৭ বছরের কোন শিক্ষার্থীর পিতা-মাতা বা আইনগত অভিভাবক উক্ত বীমা সুবিধার আওতায় আসতে পারেন।
বাৎসরিক ৮৫ টাকা প্রিমিয়াম পরিশোধের মাধ্যমে এ বীমার আওতায় আসার পর কোন শিক্ষার্থীর অভিভাবকের শারীরিক অক্ষমতা বা মৃত্যুতে শিক্ষার্থীর বয়স ১৭ বছর হওয়া পর্যন্ত মাসিক ৫০০ টাকা হারে বৃত্তি প্রাপ্য হবে, যা শিক্ষার্থীর পড়াশোনা চলমান রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
বার্ষিক প্রিমিয়াম আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি করে বর্ধিত বীমা সুবিধা বা মাসিক বৃত্তি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমায়।
আইডিআরএ বলছে, জেলা প্রশাসন বা তার অধীনস্ত কার্যালয় জেলা, উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনায় সম্পৃক্ত থাকেন। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়ে থাকে; যেমন- কালক্টরেট স্কুল, বিয়াম স্কুল ইত্যাদি। জেলা প্রশাসকগণ উদ্যোগ গ্রহণ করলে জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের শিক্ষার্থীদেরকে এ শিক্ষা বীমার আওতায় আনতে পারেন।
এর ফলে অনাকাংখিত দুর্ঘটনায় অভিভাবকের অবর্তমানে বা অক্ষমতায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন বিঘ্নিত হবে না। ঝড়ে পড়ার হার রোধসহ সার্বিকভাবে শিক্ষায় ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি হবে।
এই প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা পরিকল্পটির কার্যক্রম সফল করার লক্ষ্যে জেলার সকল সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থীকে উক্ত পরিকল্পের আওতাভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকদের অনুরোধ জানিয়েছে আইডিআরএ।
চিঠিতে আরো বলা হয়, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ২০২১ সালের ১ মার্চ প্রধানমন্ত্রী ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা’ পরিকল্পটি উদ্বোধন করেন। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে এই বীমা পরিকল্পটি জীবন বীমা করপোরেশনের মাধ্যমে প্রথমে দুই বছরের জন্য সীমিত পরিসরে পাইলটিং করা হয়। ২০২৩ সালে সকল জীবন বীমা কোম্পানির মাধ্যমে বাজারজাতকরণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।
ফলে গত বছরে বেসরকারি কোম্পানিসমূহের মাধ্যমে প্রায় ৭৮ হাজার শিক্ষার্থী এ বীমা পরিকল্পের আওতায় এসেছে। চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত সকল স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের এ বীমার আওতায় আনা হয়েছে, যার সংখ্যা প্রায় ২ লাখ।