চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ২৪ অভিযোগ সোনালী লাইফের সিইও’র
সোনালী লাইফের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের প্রিমিয়ামের অর্থ আত্নসাৎ, অবৈধ কার্যক্রম এবং দুর্নীতি ও অনিয়মের- সুনিদির্ষ্ট ২৪ টি অভিযোগ তুলে ধরেছেন সিইও মীর রাশেদ বিন আমান।
সোনালী লাইফ রক্ষায় সোমবার (৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দিয়েছেন তিনি। চিঠিতে মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রম এবং দুর্নীতির তালিকা তুলে ধরা হয়।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বরাবর দেওয়া চিঠিতে রাশেদ বিন আমান উল্লেখ করেন, সোনালী লাইফের সাম্প্রতিক ঘটনা বিষয়ে আপনি অবগত আছেন। সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে অধিকাংশ পরিচালক কোম্পানিটির চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের পরিবারের সদস্য হওয়ায় মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির একক কর্তৃত্ব ভোগ করছে।
তালিকায় থাকা ২৪টি অভিযোগ হলো- (১) অবৈধভাবে ও বিনা অর্থে কোম্পানির শেয়ারের মালিক হওয়া, (২) অবৈধ জায়গার উপর রাজউক অনুমোদনবিধীন ভবন অধিকমূল্যে বিক্রীকরণ, (৩) সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এর টাকা দিয়ে ব্যাক্তিগত খরচ বহন করা, (৪) অতিরিক্ত অফিস ভাড়া প্রদান, (৫) ইম্পিরিয়াল বিল্ডিং এর বিদ্যুৎ বিল প্রদান, (৬) ইম্পিরিয়াল বিল্ডিং এর পানির বিল প্রদান, (৭) হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে টাকা প্রেরণ, (৮) পরিবারের সদস্যদের প্রতিমাসে বেতন প্রদান, (৯) পরিবারের সদস্যদের প্রিমিয়ামের টাকা সোনালী হতে প্রদান, (১০) ড্রাগন সোয়েটার কোম্পানীর কর্মচারীদের বেতন সোনালী লাইফ হতে প্রদান, (১১) গ্রুপ পলিসির টাকা আত্মসাৎ, (১২) ঘোষিত লভ্যাংশ বাইরে অতিরিক্ত ৫% নগদ লভ্যাংশ গ্রহণকরণ, (১৩) পরিচালকের ব্যক্তিগত খাবার বিল, (১৪) পরিচালকের ব্যক্তিগত বিলাসিতা ও মনোরঞ্জনের বিল, (১৫) পরিচালকের ব্যক্তিগত গাড়ী কোম্পানীর টাকায় ক্রয়করণ, (১৬) পরিচালকের ব্যক্তিগত গাড়ী রক্ষণাবেক্ষণ বিল প্রদান, (১৭) ইম্পিরিয়াল জিম এর এসি এনা ও মাসিক জিম বিল প্রদান, (১৮) পরিচালক হিসাবে অবৈধ কমিশন গ্রহণ, (১৯) ইম্পিরিয়াল হোটেল বিলের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ, (২০) ইম্পিরিয়াল বিল্ডিং এর লিফট রক্ষণাবেক্ষণ বিল প্রদান, (২১) গ্রাহকের জমানো অর্থ হতে পরিচালকের বাড়ির সিকিউরিটি গার্ডের মাসিক বিল প্রদান, (২২) ভবন ক্রয়ের জন্য ডিপোজিটের (এফডিআর) বিপরীতে লোন (এসওডি) করে ১৫ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা সুদ প্রদান, (২৩) সোনালী লাইফের পরিশোধকৃত বিদ্যুৎ ও পানির বিলের টাকা ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে মোস্তফা গোলাম কুদ্দুছের গ্রহণ, (২৪) পরিচালক না থাকা সত্ত্বে ও অবৈধভাবে টাকা আত্মসাৎ করা সহ বিভিন্ন অনৈতিক কার্যক্রম।
চিঠিতে সিইও আরো বলেন, আইডিআরএ চেয়ারম্যানের দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটি অডিট ফার্মকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের অন্যান্য পরিচালক অডিট কার্যক্রম ব্যহত করার জন্য আমাকে অফিসে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। সকল কার্যক্রম বাঁধাগ্রস্থ করছেন। এছাড়াও, অডিট কার্যক্রম ২০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার জন্য আইডিআরএ নিকট আবেদন করা হয়েছে, যাতে তার অবৈধ কার্যক্রম, দুর্নীতির প্রমানপত্র গায়েব করে ভুয়া প্রমানপত্র তৈরীর সুযোগ পায়। কোম্পানীর ভাইস চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত বিভিন্ন বিলের মাধ্যমে হিসাব বিভাগ হতে বর্তমান চেয়ারম্যান তার নিজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে চেক ইস্যু করে গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
এই দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ করে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের কার্যক্রম স্থগিত করার ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান মীর রাশেদ বিন আমান।