দাবি পরিশোধ ১২.৭৩ কোটি টাকা
1 min read

দাবি পরিশোধ ১২.৭৩ কোটি টাকা

ডাক জীবন বীমার আওতায় ১.২৯ লাখ গ্রাহক

প্রচলিত লাইফ বীমা কোম্পানির বাইরে দেশের ডাক অধিদপ্তর পরিচালিত ‘ডাক জীবন বীমা’ আওতায় রয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৬১৮ গ্রাহক।  চলমান এসব পলিসির বীমা অংকের পরিমাণ ১ হাজার ৭১২ কোটি ৬১ লাখ ১৪ হাজার ৬৫৫ টাকা।  এ ছাড়াও ২৫ হাজার ৭৭৯ গ্রাহকের নেয়া এই বীমা পলিসি তামাদি অবস্থায় আছে।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র কাছে পাঠানো ডাক অধিদপ্তরের চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গত ২৫ জানুয়ারি এ চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন ডাক অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা) এবং সঞ্চয় ও বীমা প্রকল্পের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক মো. আবু তালেব।

ডাক জীবন বীমা হলো বাংলাদেশ ডাক বিভাগের পরিচালনায় একটি যুগপৎভাবে বীমা পলিসি ও সঞ্চয় প্রকল্প। এটি চালু করা হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি জনকল্যাণমূলক বীমা প্রকল্প হিসেবে। তবে এটি নিয়ন্ত্রণ, পরিচালন ও বিপণন করে ডাক বিভাগ। বর্তমানে ডাক জীবন বীমার ৭ ধরণের পরিকল্প চালু রয়েছে বাজারে।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষেকে পাঠানো ডাক অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে ডাক জীবন বীমার ১ হাজার ১৪৩টি পলিসির বিপরীতে বীমা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। টাকার অংকে এসব বীমা দাবির পরিমাণ ১৮ কোটি ৭০ লাখ ২ হাজার।

উত্থাপিত এসব বীমা দাবির মধ্যে ৯০৫টি বীমা দাবি বাবদ ১২ কোটি ৭৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছে ডাক বিভাগ।  ২০২৩ সালে ডাক জীবন বীমার অনিষ্পন্ন দাবির সংখ্যা ২৩৮টি এবং টাকার পরিমাণ ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৩২ হাজার।

বাংলাদেশ অঞ্চলে ১৮৮৪ সাল থেকে ডাক জীবন বীমা পলিসি চালু রয়েছে। শুরুতে ডাক বিভাগের কর্মচারীদের আর্থিক নিরাপত্তা দিতে এই বীমা চালু করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৩ সালে সরকার এটি সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। পূর্বাঞ্চল (ঢাকা) ও পশ্চিমাঞ্চল (রংপুর) নামে দুটি অঞ্চলে ভাগ করে পরিচালনা করা হয় ডাক জীবন বীমার কার্যক্রম।

ডাক অধিদপ্তরের তথ্য মতে, মুনাফা অর্জন করা ডাক জীবন বীমার উদ্দেশ্য নয়। তাই এর লাভ বা লোকসানের কোন অংশই গ্রহণ করে না সরকার।  এই বীমা তহবিলের সব টাকা সরকার আপন জিম্মায় রাখে। এক্ষেত্রে শুধু বীমা গ্রাহকদের উপকারার্থে এর তহবিল ব্যবহার করা হয়। এই বীমা পলিসি গ্রাহকদের ভবিষ্যত নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদান করে।

উচ্চহারে বোনাস এবং নিম্নতম প্রিমিয়ামই ডাক জীবন বীমার বিশেষ আকর্ষণ। স্বল্প মূল্যের বীমা প্রদানের সুবিধা, পরিচালনায় মিতব্যয়িতা এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য ডাক জীবন বীমা বাংলাদেশের একটি অন্যতম জনকল্যাণমূলক বীমা প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত। এই বীমার উদ্বৃত্ত্ব অর্থের সবটুকু বোনাস হিসেবে গ্রাহকদের মধ্যে বন্টন করা হয়।

আজীবন বীমা, মেয়াদী বীমা, এন্ডোমেন্ট বীমা, শিক্ষা বীমা, বিবাহ বীমা, যৌথ বীমা ও প্রতিরক্ষা বীমা- এই ৭ ধরনের পলিসি রয়েছে ডাক জীবন বীমায়।  দেশের সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি, সামরিক অর্থাৎ যেকোন নাগরিক যেকোন ডাকঘরে গিয়ে ডাক জীবন বীমা পলিসির আওতায় আসতে পারেন। পলিসিরও কোন ঊর্ধ্বসীমা নেই, যেকোনো অঙ্কের পলিসি করা যায়।

পলিসি শুরুর দু’বছর পর মোট জমা টাকার ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নেয়া যায় ডাক জীবন বীমায়। প্রিমিয়াম জমা দেয়া যায় যেকোন ডাকঘরে গিয়ে। আবার মেয়াদ শেষে যেকোন ডাকঘর থেকেই তোলা যায় বীমার টাকা। এমনকি চাকরিজীবীদের বেতন থেকে কর্তনের মাধ্যমেও প্রিমিয়াম পরিশোধ করা যায়। অগ্রিম প্রিমিয়াম দিলে কিছু সুবিধাও পান গ্রাহকেরা। আবার কোন কারণে বীমা পলিসি বাতিল হয়ে গেলে তা পুনরুজ্জীবিত করার সুযোগও রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *