বীমা আইন লঙ্ঘন; বিনিয়োগ সংকটে অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স
বীমা আইন লঙ্ঘন করে ব্যবসা করছে সাধারণ বীমা প্রতিষ্ঠান অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। একইসঙ্গে তীব্র বিনিয়োগ সংকটে ভূগছে প্রতিষ্ঠানটি। সরকারি সিকিউরিটিজ খাতেও বিনিয়োগ অনেক কম রয়েছে তাদের। আইন বিরোধী অগ্রণীর এসব কর্মকান্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কাছে পাঠানো বিনিয়োগ সংক্রান্ত ত্রৈমাসিক তথ্যে অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের ‘বীমা আইন লঙ্ঘন ও সরকারি সিকিউরিটিজ খাতে বিনিয়োগ কম থাকার’ ভয়াবহ চিত্র উঠে আসে।
তৃতীয় প্রজন্মের এই প্রতিষ্ঠান আইডিআরএতে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছে, বর্তমানে সরকারি সিকিউরিটিজ খাতে ৩.৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। যা প্রতিষ্ঠানটির সম্পত্তির ৪.৫৩% বলে উল্লেখ করা হয়। বীমা প্রবিধানমালা ২০১৯ ৪(ক) অনুযায়ী ২.৯৭% কম বিনিয়োগ আছে- প্রতিষ্ঠানটি স্বীকার করেছে।
বিষয়টি নিয়ে অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সিইও আজহারুল ইসলাম আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান বরাবর একটি চিঠি দিয়েছেন। সিইও স্বাক্ষরিত চিঠিতে, বিগত ২-৩ বছর অগ্রণীর ব্যবসার হার হ্রাস পেয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। এমনকি, বীমা প্রবিধানমালা ১০১৯ এর ৪ ৯(ক) লংঘন করায় আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সিকিউরিটিজ খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে ব্যর্থ হওয়ার কারণ হিসেবে ‘ভু-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট’কে দায়ী করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ প্রসঙ্গে আইডিআরএর এক পরিচালক অর্থবাংলাকে বলেন, প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষা এবং গ্রাহক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারি সিকিউরিটিজ খাতে বিনিয়োগের পরিমান নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। বীমা কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ও বিনিয়োগের এফডিআর নিয়ে, কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। সিকিউরিটিজ খাতে বিনিয়োগ কম থাকা- বীমা আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং গুরুত্বর অপরাধ।
‘আইন লঙ্ঘন করার সাহস দেখিয়েছে অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স’- এমনটি জানিয়ে তিনি আরো বলেন, প্রতিষ্ঠানটির একের পর এক অনিয়ম, দুর্ণীতি ও বীমা আইন লঙ্ঘনের তথ্য আইডিআরএ, অর্থ মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়সহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ পর্যবেক্ষণ করছে। আইন না মেনে ব্যবসা করলে যে কোন প্রতিষ্ঠানটিকে কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে। বীমা খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে আরো কঠোর হবে আইডিআরএ। আইন ভঙ্গ করলে প্রয়োজনে যে কোন প্রতিষ্ঠানের ‘লাইসেন্স’ বাতিল করা হতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক বীমা কোম্পানীর সিইও অর্থবাংলাকে বলেন, বীমা খাত তুলনামূলকভাবে দুর্বল। এগুলো থেকে উত্তোলনের জন্য অনেক কাজ করতে হবে। সেক্ষেত্রে সরকারি সিকিউরিটিজের চেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ আর কিছু হয় না। এ খাতে যারা আইন লঙ্ঘন করবে- তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।