ব্যাংকাস্যুরেন্স যেভাবে কাজ করে
বাংলাদেশে ব্যাংকাস্যুরেন্স ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নতুন হলেও বহির্বিশ্বে বহু বছর পূর্বেই এর প্রচলন বা আবির্ভাব ঘটে।
জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে এখানে বলে রাখা প্রয়োজন যে, ব্যাংকাস্যুরেন্স কোন ধরনের বীমা পণ্য নয়। এটি বীমা কোম্পানি এবং ব্যাংকের সাথে এক ধরনের লিখিত চুক্তি।
এই চুক্তির মাধ্যমে ব্যাংক বীমা কোম্পানির পক্ষে তাদের পণ্য বা পলিসি বিক্রয় বা বাজারজাত করে থাকে। অর্থাৎ ব্যাংক সেলস বা কমিশন এজেন্ট হিসেবে কাজ করে থাকে।
এই ব্যবস্থায় ব্যাংক সাধারণত প্রথমে নিজস্ব গ্রাহকের কাছে বীমা পলিসি বিক্রয় করে থাকে এবং এ ব্যাপারে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে থাকে।
ব্যাংকাস্যুরেন্সের মাধ্যমে ব্যাংক তার নিজস্ব ব্যবসা অর্থাৎ ব্যাংকিং ব্যবসার পাশাপাশি বীমা পলিসিও বিক্রয় করে থাকে।
এই ব্যবস্থায় বীমা কোম্পানি নিজস্ব সেলস ফোর্সের মাধ্যমে বীমা পলিসি বিক্রয় করার খরচ কমানো এবং প্রিমিয়াম বৃদ্ধি করতে সক্ষম হতে পারে।
অপরপক্ষে ব্যাংক কমিশন অর্জনের মাধ্যমে অতিরিক্ত আয় অর্জন করে থাকে। এই ব্যবস্থায় বীমা কোম্পানি এবং ব্যাংক উভয় পক্ষের জন্যই উইন-উইন সিচুয়েশন হিসেবে কাজ করে।
এখানে ব্যাংকের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে বীমা গ্রাহকের কাছ থেকে প্রস্তাব পত্র গ্রহB করা এবং পলিসি ইস্যুর বেলায় প্রিমিয়াম সংগ্রহ করা এবং চুক্তির শর্তানুযায়ী মাসের শেষে বীমা কোম্পানিকে সেলস রিপোর্ট বা স্টেটমেন্ট অব একাউন্ট পাঠানো।
বীমা দাবির বেলায় বীমা গ্রাহক বা তার নমিনী ইচ্ছা করলে বীমা কোম্পানির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ কিংবা ব্যাংকের মাধ্যমেও যোগাযোগ করতে পারে।
বীমা দাবি গ্রহণযোগ্য হলে বীমা কোম্পানি সরাসরি বীমা গ্রাহক বা তার নমিনীকে চেক প্রদান এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে এ ব্যাপারে অবহিত করে থাকে।
এখানে বলে রাখা প্রয়োজন যে, বীমা দাবির টাকা পরিশোধের ব্যাপারে আইনগতভাবে ব্যাংকের কোন দায়-দায়িত্ব নাই।
বীমা কোম্পানি সাধারণত ব্যাংকের কর্মচারি, যারা বীমা পলিসি বিক্রয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে।
এই ব্যবস্থায় বীমা গ্রাহকের সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে বীমা পলিসি সেলস বুথ বা কাউন্টার থাকা প্রয়োজন।