1 min read

মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্যখাতে স্বাস্থ্য বীমার প্রিমিয়াম বৃদ্ধি নতুন সংকটের ইঙ্গিত

মালয়েশিয়ায় চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য বীমার প্রিমিয়াম বৃদ্ধি এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বীমা ও তাকাফুল কভারেজের খরচ এতটাই বেড়ে গেছে যে, এর প্রভাব পড়ছে দেশটির সব শ্রেণির মানুষের ওপর।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাতুক সেরি ড. জুলকেফলি আহমাদ বলেন, প্রিমিয়ামের এই ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকলে স্বাস্থ্যব্যবস্থায় অসামঞ্জস্য তৈরি হবে। সরকারি হাসপাতালগুলো ইতোমধ্যেই নিম্ন ও মধ্য আয়ের জনগোষ্ঠীর প্রধান ভরসা। এখন যদি সমাজের ধনী শ্রেণিও এই হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল হয়ে ওঠে, তবে সেবার মান ও সক্ষমতা বড় ধরনের সংকটে পড়তে পারে।

তিনি সতর্ক করে বলেছেন, পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না আনা গেলে শুধু মধ্যবিত্ত নয়, বরং উচ্চ আয়ের মানুষও ব্যক্তিগত বীমা কভারেজ ছেড়ে সরকারি হাসপাতালের ওপর নির্ভর করতে শুরু করবে।

সরকারি হাসপাতালগুলো দেশের সব মানুষের জন্য উন্মুক্ত। তবে বাস্তবে এই হাসপাতালগুলোর প্রধান সেবা গ্রহণকারী সাধারণত নিম্ন আয়ের মানুষ। এখন যদি ধনী শ্রেণিও বেসরকারি হাসপাতাল এড়িয়ে সরকারি সেবার দিকে ঝুঁকে পড়ে, তবে হাসপাতালগুলোতে বাড়তি চাপ সৃষ্টি হবে। এর ফলে চিকিৎসা পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হতে পারে, স্বাস্থ্যকর্মীরা অতিরিক্ত কর্মভার বহন করতে বাধ্য হবেন এবং শেষ পর্যন্ত সার্বিক সেবার মান নেমে আসতে পারে।

চিকিৎসা খরচের ঊর্ধ্বগতি বর্তমানে জাতীয় গড় মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি হারে বাড়ছে। হাসপাতালের খরচ, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওষুধের দাম এবং চিকিৎসকদের ফি বাড়তে থাকায় বীমা কোম্পানিগুলোও বাধ্য হচ্ছে প্রিমিয়াম বাড়াতে। কিন্তু এর চাপে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। অনেকেই কভারেজ বাতিল করছেন, কেউ আবার সাময়িকভাবে স্থগিত রেখে পুনরায় সক্রিয় করছেন। এতে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, যা বীমা খাতের স্থিতিশীলতার জন্য দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এই পরিস্থিতি এককভাবে কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়। প্রয়োজন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বীমা ও তাকাফুল অপারেটর এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যৌথ উদ্যোগ। এতে প্রিমিয়ামের ঊর্ধ্বগতি কিছুটা হলেও প্রশমিত হতে পারে। পাশাপাশি চিকিৎসা খাতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব হবে।

দেশটির নীতিনির্ধারকদের মতে, সমাধানের মূল পথ হলো স্বচ্ছ মূল্যনীতি প্রণয়ন, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের খরচের মধ্যে ভারসাম্য আনা এবং বীমা কোম্পানিগুলোর দায়িত্বশীল নীতি অনুসরণ নিশ্চিত করা। এছাড়া ভোক্তাদের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে স্বচ্ছতা আনা জরুরি।

(সংবাদ সূত্র: এশিয়া ইন্স্যুরেন্স রিভিউ)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *