সোনালী লাইফের আর্থিক ভিত অত্যন্ত শক্তিশালী: আইডিআরএ
সোনালী লাইফের আর্থিক ভিত্তি অত্যন্ত শক্তিশালী।
সোনালী লাইফের আর্থিক সক্ষমতার বিষয়ে এমন মতামত দিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) ।
কারণ সোনালী লাইফের নবায়ন প্রিমিয়াম আয়ের হার ৯৫.৭২ শতাংশ। অর্থাৎ তামাদির হার মাত্র ৪.১৮ শতাংশ।উল্লেখ, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে লাইসেন্স পাওয়া ১৩টি লাইফ বীমা কোম্পানির আর্থিক সক্ষমতা যাচাই করে আইডিআরএ। কোম্পানিগুলোর মাত্রাতিরিক্ত কমিশন, প্রসাশনিক ব্যয় এবং অন্যান্য অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো অভিযোগের ভিত্তিতে আর্থিক সক্ষমতা যাচাইয়ের উদ্যোগ নেয় আইডিআরএ।
সোনালী লাইফের ২০২০ ও ২০২১ সালের চলমান পলিসি ও তামাদি পলিসির বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালে সোনালী লাইফ পলিসি ইস্যু করে ৫ লাখ ৬ হাজার ৩৮টি। তামাদি পলিসি পুনরুজ্জীবিত করে ৩ হাজার ৩৩০টি। অপরদিকে নতুন করে পলিসি তামাদি হয় ৬ হাজার ২৩টি। ফলে ২০২০ সাল শেষে চালু পলিসি সংখ্যা দাঁড়ায় ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৬৫টি। আবার ২০২১ সালে পলিসি তামাদি হয় ১০ হাজার ৫৫৯টি, যা মোট পলিসির ৪.২৮ শতাংশ।
আইডিআরএ তদন্তে বলা হয়, সোনালী লাইফ ব্যবসা শুরুর পর থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত অনুমোদিত সীমার চেয়েও ২৬.৪৭ শতাংশ কম ব্যয় করেছে। এছাড়া কোম্পানির নবায়ন প্রিমিয়াম আয় হয়েছে ৯৫.৭২ শতাংশ।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ভ্যালুয়েশন রিপোর্ট অনুসারে ২০২১ সালে সারপ্লাসের পরিমাণ ৯৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ২০২০ সালে কোম্পানিটির সারপ্লাস ছিল ৪৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
সর্বশেষ গত অক্টোবরের হিসাব অনুসারে, চলতি বছরে কোম্পানিটি সর্বমোট ৬২৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকার প্রিমিয়াম সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে প্রথম বর্ষ প্রিমিয়াম ৩৪৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, নবায়ন প্রিমিয়াম ২৮১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা এবং গ্রুপ বীমার প্রিমিয়াম ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
এ ছাড়াও আলোচ্য সময়ে উত্থাপিত ১৫ হাজার ৬৩৪টি বীমা দাবি বাবদ সর্বমোট ৭৬ কোটি ৯১ লাখ টাকার বীমা দাবি পরিশোধ করেছে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপনী হিসাবে দেশের লাইফ বীমা খাতে নতুন প্রিমিয়াম সংগ্রহ বৃদ্ধিতে শীর্ষ অবস্থানে ছিল সোনালী লাইফ। কোম্পানিটি সর্বশেষ হিসাব সমাপনী বছরে নতুন প্রিমিয়াম সংগ্রহ বৃদ্ধি করে প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা। এর আগে ২০২১ সালেও কোম্পানিটি প্রায় ১২৪ কোটি টাকা নতুন প্রিমিয়াম বৃদ্ধি করে লাইফ বীমা খাতে শীর্ষ অবস্থানে ছিল।
এ বিষয়ে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিসি) মীর রাশেদ বিন আমান বলেন, বাংলাদেশে সাধারণ মানষের মাঝে বীমা নিয়ে একটা নেতিবাচক ধারণা আছে। সেই সাথে জিডিপিতে বীমা খাতের অবদান খুবই কম। আমরা বীমা নিয়ে সাধারণ মানুষের ভুল ধারণা দূর করতে চাই। এ কারণে গত ১০ বছর ধরেই আমরা ৭ দিনের মধ্যে বীমা দাবি পরিশোধ করেছি।
তিনি বলেন, জিডিপিতে বীমা খাতের অবদান বাড়াতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন গ্রাহকসেবা, গ্রাহকের আস্থা তৈরি। আমরা সেই জায়গাটায় নক করতে পেরেছি। গ্রাহকরা আমাদের প্রতি আস্থা রাখছে বলেই তারা আমাদের কোম্পানিতে বীমা করছে।
সোনালী লাইফে মুখ্য নির্বাহী আরো বলেন, আমরা প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করেছি। আমরা সব সময়ই চেষ্টা করেছি শুধু বীমা দাবি পরিশোধ নয়, ডিউ টাইমে বীমা দাবি পরিশোধ করার কমিটমেন্ট ঠিক রাখার। আমরা আশা করি, এর মাধ্যমেই বীমা খাতে কাঙ্খিত পরিবর্তন আসবে।