হোমল্যান্ডের চেয়ারম্যান-পরিচালকসহ ৬০ জনকে দুদকে তলব
1 min read

হোমল্যান্ডের চেয়ারম্যান-পরিচালকসহ ৬০ জনকে দুদকে তলব

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হোমল্যান্ড লাইফে গ্রাহকদের জমা করা ১০৪ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা তদন্ত করতে পলিসি হোল্ডার পরিচালকসহ কোম্পানিটির সাবেক ও বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের ৬০ জনকে তলব করেছে ।

বীমা কোম্পানিটির মুখ্য নির্বাহীর কাছে পাঠানো পৃথক ৩টি চিঠিতে তাদেরকে হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ৭টি ধাপে তাদেরকে হাজির হয়ে প্রয়োজনীয় বক্তব্য উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে। এই তালিকায় বীমা কোম্পানিটি সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন কর্মকর্তার নামও রয়েছে।

চিঠিতে, হাজিরার সময় পরিচালকদের কোম্পানির শেয়ার সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি সাথে রাখতে বলা হয়েছে। একইসাথে হোমল্যান্ড লাইফের ১০৪ কোটি টাকা আত্মসাতকালে কার কি ভূমিকা ছিল তার ব্যাখ্যাসহ সংশ্লিষ্ট নথিপত্রও সাথে রাখতে বলা হয়েছে।

এর আগে ১০ আগস্ট হোমল্যান্ড লাইফের পরিচালকদের পাসপোর্টের কপিসহ ১০ ধরনের তথ্য চেয়ে চিঠি দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন। পরবর্তীতে আরো ৭ ধরনের তথ্য চেয়ে চিঠি দেয় দুদক।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রাহিমা আক্তার নামে হোমল্যান্ড লাইফের একজন গ্রাহক গত ৫ মার্চ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় একটি রিট দায়ের করেন। রিট আবেদনে বীমা গ্রাহকদের ১০৪ কোটি টাকা লুটের ঘটনায় বিচারিক তদন্ত এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়।

পরবর্তীতে গত ২৯ মার্চ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াত সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

আদালত শুনানি শেষে হোমল্যান্ড লাইফের ১০৪ কোটি ৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৮ টাকা লুটের অভিযোগ তদন্ত করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের প্রতি নির্দেশ দেন।

এই প্রেক্ষিতে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে গ্রাহকদের জমা করা ১০৪ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

ব্যাংকে বন্ধক রাখা ৫০ হাজার শেয়ারের মূল সার্টিফিকেট ’হারিয়েছে’ দাবি করে হোমল্যান্ড লাইফের ৫ পরিচালকের নামে ইস্যু করা হয় ডুপ্লিকেট সার্টিফিকেট।  অপরদিকে এসব শেয়ার সার্টিফিকেট আইসিবি ইসলামী ব্যাংকে বন্ধক রেখে ঋণ নেন কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কাজী এনাম উদ্দীন আহমেদ।

এর প্রেক্ষিতে আইসিবি ইসলামী ব্যাংক দাবি করে, যেসব শেয়ারের ডুপ্লিকেট সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে তা ২০০৫ সাল থেকেই ব্যাংকটির কাছে বন্ধক আছে। তাই হোমল্যান্ড লাইফের পরিচালনা পর্ষদে তাদের অন্তভুক্ত করতে হবে। সেই সাথে বিগত বছরগুলোর লভ্যাংশও তাদেরকে পরিশোধ করতে হবে। গত বছরের ৫ অক্টোবর হোমল্যান্ড লাইফকে চিঠি দিয়ে এসব দাবি করে ব্যাংকটি।

যাদেরকে দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছে-

ফয়জুল হক, সাবেক চেয়ারম্যান; নজুরুল ইসলাম, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান; জামাল উদ্দীন, বর্তমান চেয়ারম্যান; নাফিসা সালমা, পরিচালক; মো. মহিউদ্দিন, পরিচালক; মো. আব্দুর রব, পরিচালক; আব্দুর রাজ্জাক, পরিচালক; কামাল মিয়া, পরিচালক; জামাল মিয়া, পরিচালক; আব্দুল হাই, পরিচালক; আব্দুল আহাদ, পরিচালক; মফিজউদ্দিন, পরিচালক; সরাফত উল্লাহ ঢালী, প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক; কাজী রেজাউল হক, সিইভিপি; মো. আব্দুল জলিল, সিইভিপি; নকুল চন্দ্র মজুমদার, সিইভিপি; আলহাজ্ব কাজী এনাম উদ্দিন আহমেদ, সাবেক চেয়ারম্যান; আবদুস শুকুর, সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান; আবুল ফয়েজ (আব্দুর রবের বিকল্প পরিচালক); এ এইচ এম মহসিন (ফয়জুল হকের বিকল্প পরিচালক);

মশিউজ্জামান খান (কাজী ফারুক আহমেদের বিকল্প পরিচালক); ফারুক আহমেদ, পরিচালক; মাজহারুল কাদের, পরিচালক; মো. কাউছার জাহান কয়ছর, পরিচালক; মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক কোম্পানি সচিব; রিজিয়া সুলতানা, পরিচালক; আব্দুল কুদ্দুস (জামাল উদ্দিনের বিকল্প পরিচালক); হোসনে আরা গনি, পরিচালক; মফাচ্ছিল আলি (বিকল্প পরিচালক); জয়নাল আবেদীন (বিকল্প পরিচালক); মো. শামীম আহমেদ, (পলিসি হোল্ডার পরিচালক এবং ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুস শুকুরের ছেলে);

আবু তাহের খান (পলিসি হোল্ডার পরিচালক); একেএম জাকির হোসেন (পলিসি হোল্ডার পরিচালক); কাজী নুরজাহান খান আহমেদ (পলিসি হোল্ডার পরিচালক এবং চেয়ারম্যান কাজী এনামের স্ত্রী); দেলোয়ার হোসেন তফাদার (পলিসি হোল্ডার পরিচালক); সাবের আলী খান (পলিসি হোল্ডার পরিচালক); মো. এনামূল হাসান (পলিসি হোল্ডার পরিচালক); আরজ আলী খান (পলিসি হোল্ডার পরিচালক); মাহিমা বেগম (পলিসি হোল্ডার পরিচালক); সামছুন নাহার (পলিসি হোল্ডার পরিচালক)

শাদত আলী খান (পলিসি হোল্ডার পরিচালক); মেজর (অব.) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, পরিচালক; মো. জুলহাস, পরিচালক; সালেহ হোসেন, পরিচালক; প্রাক্তন চেয়ারম্যান কাজী এনাম উদ্দিন আহমেদের ছেলে কাজী আরাফাত; আম্বিয়া খাতুন, পরিচালক; আবুল খায়ের চৌধুরী (কামাল মিয়ার বিকল্প পরিচালক); আব্দুল খালিক (আব্দুর রাজ্জাকের বিকল্প পরিচালক); সাবের আলী খান (পলিসি হোল্ডার পরিচালক); আব্দুর মুমিন, পরিচালক;

তজম্মুল আলী, পরিচালক; মোসলেহ উদ্দিন ঢালী, পল্লী পরিবারিক বীমা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক; জাকির হোসের সরকার (সাবেক সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক); আবুল বাশার আখন্দ, প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক; জহির উদ্দিন (আইন ও সম্পদ বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা); আমিনুল হক, এফসিএ, অডিটর; মোহাম্মদ আলী, সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক; মো. শফিকুল ইসলাম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক অর্থ ও হিসাব; তওয়াবুর রহিম, সাবেক সহকারী মহাব্যবস্থাপক; এবং ওয়াহেদুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *